এরই মাঝে স্টীন্ আখর দিয়ে আমাদের পরিচিত সুরে শুরু করে দিয়েছে বাড়ির গুণকীর্তন পালা। সুর ধরে ধরে আমরা ড্রইং-ডাইনিং পেরিয়ে কিচেনে পৌঁছলাম। এখানকার অবস্থাও তথৈবচ। টেবিলের উপর পেট কাটা তরমুজ। তার অর্দ্ধেক শাঁস কুরিয়ে খাওয়া হয়েছে। সিঙ্কে গাদাগুচ্ছের এঁটো বাসন। টেরিয়ে টেরিয়ে দেখছি, হঠাৎ ভীষণ দুম্ দুম্ দুম্ দুম্ শব্দে কাঠের মেঝে সহ গোটা ফ্ল্যাট থরথরিয়ে কেঁপে উঠল। ভূমিকম্প না কি!
পড়তে থাকুনসিটি সেণ্টারের বাস ধরবো বলে হা পিত্যেশ করে দাঁড়িয়ে আছি। ট্র্যাফিকের চাপ থাকে সকালটায়। বাসও দেরী করে মাঝে মধ্যে। তারপর দেখা যায় একসাথে পরপর তিনটে এসে হাজির। বেশ ভিড়, তবু তারই মধ্যে কোনোক্রমে দাঁড়াবার একটু জায়গা পেলাম। দেখি সামনের সীটে জালনার ধারে, আরে! প্রীতম খোসলা না! সদ্য মুম্বই থেকে এসেছে। আমার কর্তার কোলীগ। খোসলার তুম্বোমুখ দেখে মনে হচ্ছে না সুখবর। তবু ভিড় পাতলা হতে পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম। বললাম, ‘হ্যালো!’ চমকে মুখ ফেরালেন, ‘হ্যালো জী হ্যালো।’
পড়তে থাকুনমা আর সন্তানের মাঝে মনের মেলবন্ধন আর হল না। কারণ সন্তান নিজের ভাষায় মায়ের সাথে কথা বলতে শিখল না। সে হলমার্কের কার্ডের ভাষায় কথা বলল। নিজের প্রাণের প্রদীপ মায়ের পায়ে দিতে শিখল না, তার আগেই পাড়ার ফ্লোরিস্টরা সুসজ্জিত ফুলের তোড়া ধরিয়ে দিল সন্তানের হাতে। মাকে মধুর বাক্য কি বলবে বুঝতে না পেরে হাজির করল ইয়াব্বড় কেকের বাক্স। মাদারস্ ডে লেখা। ফুল আঁকা। ঝকাঝক ডেকোরেট করা। আমরা যীশুকে মেরেছি ক্রুসিফিকেশানে আর অ্যানাকে মারলাম হলমার্কিফিকেশানে।
পড়তে থাকুনছেলেবেলায় কোলকাতার বাইরে আত্মীয়স্বজনকে চিঠি লেখার মরশুম আসত এক বারই। দূর্গাপূজোর পর পর পোস্টাপিস খুললে বাবা একগোছা হলুদ পোস্টকার্ড আর নীল কাগজের ইন্ল্যাণ্ড কিনে আনত। রবিবারের দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে হালকা রোদের তাপে ছাদে মাদুর বিছিয়ে চুল শুকাত মা। আর চিঠি লিখত। দিল্লী, নাগপুর, যাঁরা যাঁরা কোলকাতার বাইরে আছেন, তাদের জন্য ইনল্যাণ্ডের নীল খাম। আর যাঁরা কোলকাতার আশেপাশে মফঃস্বলে থাকেন তাদের জন্য বরাদ্দ হলুদ পোস্টকার্ড।
পড়তে থাকুনশুভ সন্ধ্যা! আপনারা দেখছেন ‘নিকট দর্শন’ চ্যানেলের পপুলার ইলেকশানের লাইভ শো ‘ভোটের ভটভটি’। প্রচণ্ড গরমের তাপে চাঁদি ফুটিফাটা অবস্থা, তায় জীবন সাম্পানের পালে লেগেছে ভোটের গরম হাওয়া। আপনাদের ফানুস দশা উপলব্ধি করে আমার পূর্ণ সহানুভূতি জানিয়ে শুরু করছি ‘ভোটের ভট্ভটি’।
পড়তে থাকুনবাঙালীর বাড়িতে আর তুমি বেলন-চাকি পাবে না। লাস্ট ছিল পাড়ার গিরি ঠাকুমার বাড়িতে। ঠাকুমা টেঁসে গেলে ওর ছেলে গিয়ে ওটা মিউজিয়ামে দান করে এসেছে। কোলকাতায় এলে এবার যেও। হাতে করে ঘোরানো ডায়াল ফোন আর হাতে দম দেওয়া দেওয়াল ঘড়ির পাশে মানানসই হয়েছে হাত ঘোরালেই নাড়ু, স্যরি, রুটি খাওয়ার বেলন-চাকিটা।
পড়তে থাকুনএবার নববর্ষে আমি নর্থপোলের মুণ্ডদেশ ডেনমার্কেই কাটাবো। মায়ের জন্য স্বভাবতঃই মনটা উচাটন। একলা মানুষ! দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে মার সাথে ফোনে গল্প জুড়লাম। ‘কি করতে মা তোমরা ছেলেবেলায় পয়লা বৈশাখে?’
‘করুম আর কি?’ বলে কথা শুরু করলেও পাক্কা দশ মিনিট ধরে মা স্মৃতিচারণ করে গেল। বেশ লাগছিল কিন্তু শুনতে। ভাবলাম, মায়ের ফেলে আসা পুরনো সেই দিনের কথা আজ নতুন বছরের আলোর প্রভাতে সবার সঙ্গেঁ মিলেমিশে ভাগ বাঁটোয়ারা করে নিলে কেমন হয়!
পড়তে থাকুন‘তোমার বসন্ত গেছে তেল আনতে। এবার ভাজাপর্ব শুরু হবে। গুরুদেব গরমের যেমন মর্জি। বেক্ড্, গ্রীলড, ভাপা, পোড়া। তোমার আর কি! থাকো তো গায়ে বোঁটকা গন্ধওয়ালা ইগলুওয়ালাদের পড়শি হয়ে। যতো বড়শি তো গিলছি আমরা!’
পড়তে থাকুন‘আর বলুনি বৌদি! আজ দুদিন ধরে গবাদা এ্যায়সান বিরক্ত করতেচে। যখুন তখুন শুদু এক বায়না – বুকে আয়! বুকে আয়!’
পড়তে থাকুনশেষে আমার নিরন্তর কোঁ-কোঁ সইতে না পেরে কর্তা বললেন, ‘লেখালেখির ঢং ঢাং বন্ধ করছো কেন? কে বারণ করেছে? তোমার নিজের একটা ব্লগ করো। তারপর তোমার মনের যতো হাঁসজারু আইডিয়া আছে লিখে ফেলো! তবে হ্যাঁ, কতো লোকে পড়বে, না পড়বে, কি কমেণ্ট দেবে না দেবে, তা নিয়ে কোঁকাতে বোসো না। তোমার লেখার রং ঢং। তোমারই ডট কম্। লাল বাতি জ্বললে দোকান বন্ধ্!’
পড়তে থাকুন