সিটি সেণ্টারের বাস ধরবো বলে হা পিত্যেশ করে দাঁড়িয়ে আছি। ট্র্যাফিকের চাপ থাকে সকালটায়। বাসও দেরী করে মাঝে মধ্যে। তারপর দেখা যায় একসাথে পরপর তিনটে এসে হাজির। বেশ ভিড়, তবু তারই মধ্যে কোনোক্রমে দাঁড়াবার একটু জায়গা পেলাম। দেখি সামনের সীটে জালনার ধারে, আরে! প্রীতম খোসলা না! সদ্য মুম্বই থেকে এসেছে। আমার কর্তার কোলীগ। খোসলার তুম্বোমুখ দেখে মনে হচ্ছে না সুখবর। তবু ভিড় পাতলা হতে পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলাম। বললাম, ‘হ্যালো!’ চমকে মুখ ফেরালেন, ‘হ্যালো জী হ্যালো।’
পড়তে থাকুনছেলেবেলায় কোলকাতার বাইরে আত্মীয়স্বজনকে চিঠি লেখার মরশুম আসত এক বারই। দূর্গাপূজোর পর পর পোস্টাপিস খুললে বাবা একগোছা হলুদ পোস্টকার্ড আর নীল কাগজের ইন্ল্যাণ্ড কিনে আনত। রবিবারের দুপুরে খাওয়া দাওয়া সেরে হালকা রোদের তাপে ছাদে মাদুর বিছিয়ে চুল শুকাত মা। আর চিঠি লিখত। দিল্লী, নাগপুর, যাঁরা যাঁরা কোলকাতার বাইরে আছেন, তাদের জন্য ইনল্যাণ্ডের নীল খাম। আর যাঁরা কোলকাতার আশেপাশে মফঃস্বলে থাকেন তাদের জন্য বরাদ্দ হলুদ পোস্টকার্ড।
পড়তে থাকুনএবার নববর্ষে আমি নর্থপোলের মুণ্ডদেশ ডেনমার্কেই কাটাবো। মায়ের জন্য স্বভাবতঃই মনটা উচাটন। একলা মানুষ! দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে মার সাথে ফোনে গল্প জুড়লাম। ‘কি করতে মা তোমরা ছেলেবেলায় পয়লা বৈশাখে?’
‘করুম আর কি?’ বলে কথা শুরু করলেও পাক্কা দশ মিনিট ধরে মা স্মৃতিচারণ করে গেল। বেশ লাগছিল কিন্তু শুনতে। ভাবলাম, মায়ের ফেলে আসা পুরনো সেই দিনের কথা আজ নতুন বছরের আলোর প্রভাতে সবার সঙ্গেঁ মিলেমিশে ভাগ বাঁটোয়ারা করে নিলে কেমন হয়!
পড়তে থাকুন