সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে দৈনিক এক টাকার সুখশান্তি কেনার ভেট চড়িয়ে বহুযুগের সাথী কোলাপুরিটার মুখে নিজের পা দু’খানি গলিয়ে নিলেন হরলাল মিত্তির। নেবুবাগান লেন আর বাগবাজার স্ট্রীটের ক্রসিং পেরিয়ে পশুপতি লেনে তাঁর আপিস। তিনি লোকাল র্যাশন দোকানের বড়বাবু। আর আছে সহকারি নসু আর বাবুলাল। হরলালবাবু যে চাকরিটা করেন, সেটা তাঁর একেবারেই মনঃপূত নয়। তিনি চেয়েছিলেন যশস্বী কবি […]
পড়তে থাকুনকুখ্যাত ডেনিশ সাইক্লোন উর্দের মতন আমার আপিস ঘরে সেঁধিয়ে এল সিসি। আমি কিছু বলার আগেই ধপাস করে সামনে রাখা চেয়ারে বসে, সোনালী সাদাটে চুলের জটাবুড়ির মতন ব্রহ্মতালুতে বাঁধা খোপাটা দুলিয়ে বলে উঠল, “Stort problem igen.” অর্থাৎ আবার সমস্যা। আমি বিন্দুমাত্র নড়চড় না হয়ে কেবল কপালের গুটিকয় পেশী তুলে বললাম, “অহো! আবার?” তারপর সামনে রাখা কফি […]
পড়তে থাকুনমোড়ের মাথার কৃষ্ণচূড়া বৃক্ষের কোনো লুক্কায়িত পত্রপুষ্পের আড়াল হইতে কুউ-উ, কুউ-উ ডাক শুনতে পেয়ে কালু বুঝলো বসন্ত এসে গেছে। শয্যা থেকে নেমে রাত পাজামার রশি কষতে কষতে খোলা জালানার সুমুখে দাঁড়িয়ে ভাবুক চোখে বাইরে তাকাল কালু। বৃক্ষ তন্ন তন্ন করে খুঁজে লাল সবুজের আভরণ ভেদ করে কোথাও কোকিলের কালো দেহ নজরে এল না। খুব খুঁজলো, […]
পড়তে থাকুনগল্প হচ্ছিল আমার এক পুরনো বন্ধুর সাথে বইমেলা নিয়ে। প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে দীর্ঘদিন জড়িত ওদের পরিবার। সমাজের সর্বত্র দুর্নীতি আর আভিজাত্যহীনতার যে বেনোজল ঢুকেছে, তার থেকে রেহাই পায়নি প্রকাশনার ব্যবসায়ও। “এক শ্রেণীর চালিয়াত, দুটো কাঁচা পয়সার জন্য নোংরা সাহিত্যের চুলবুলানিকে উস্কানো দিয়ে দিয়ে একেবারে গাড্ডায় এনে ফেলেছে সাহিত্যের গোটা পরিবেশটাকে।” এইসব বলে দুঃখ করতে করতে […]
পড়তে থাকুনকিংবদন্তী আছে অর্নেষ্ট হেমিংওয়ে ছ’টি শব্দের ছোট গল্প লিখে পাঠককুলকে কাঁদিয়েছিলেন, উদ্বেগে ভাবিয়েছিলেন, দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়েছিলেন। বাজি ছিল দশ ডলারের যা তিনি জিতেছিলেন। কী ছিল সেই তীব্র ক’টি শব্দ যা পাঠকের হৃৎপিঞ্জরে বিঁধেছিল অঙ্কুশের মতো? আর্থার সি. ক্লার্কের ভাষায় — “My favourite is Hemingway’s — he’s supposed to have won a $10 bet (no small sum […]
পড়তে থাকুনসবে কলির সন্ধ্যে শুরু হল। আগেই বলেচি আমাদের পাড়ায় ওদের বাড়িটাই ছিল একমাত্র দশাশই দোতলা। সেই দোতলার একটি বিশেষ কক্ষ থেকে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে শুরু হয়ে গেল হরেক কিসিমের আ-আ-এ-এ-ই-ই-অ্যা-অ্যা। আবার কখনো হাতের সুবিক্রম চাপড়ে বোলতান ফুটতো — “ধা গে না তি, না ক ধি না/ধা গে তে টে, না ক ধি না/ ধা ধিন্ না, না থুন্ না/ ধা ধি না, না তি না/ ধা নে কৎ তা, ধাগে ধিন ধা ধা।”
পড়তে থাকুনদলের বিরিঞ্চি যেন কোতোয়ালের পেয়াদা। কারো কারো বাড়ির উনুনে পা দিয়ে সে চাঁদা আদায় করে ছেড়েচে। কত কত বড়মানুষকে তুষ্ট করতে মোসাএবির চূড়ান্ত করেচে। এই তো, যেমন পাড়ার দত্তবাবু! কম মাল না কি! কিছুতেই ধরা যায় না চাঁদা আদায়ের জন্যে। বিরিঞ্চিও থাকে তক্কে তক্কে। শেষে কাক ভোরবেলায় দাঁতনরত দত্তকে গিয়ে এক্কেরে জাপটে ধরলে বিরিঞ্চি। পাড়া কাঁপিয়ে “ধরেছি, ধরেছি” বলে বিকট চীৎকার জুড়লে।
পড়তে থাকুনবাঁদরের গলায় মুক্তামালা হয়ে ঝুলচে টুকলি, ভাবতেই বুক কনকন করে দঁ-এর। রাগে গা জ্বলে যায়। ছ্যা ছ্যা ছ্যা। কলুটোলার বাবু! বলি, বাবুত্বের কি আচে ঐ চামচিকেটার? কেমন করে টুকলিকে হস্তগত করা যায় ভেবে ভেবে বাবু রূপোর পিকদান পান চুমরে চুমরে ফেলে ভরিয়ে দিলেন।
পড়তে থাকুনযজমানের বাড়ি গমগমে। পূজোর দিন ঘনিয়ে আসছে। বিদেশ বিভুঁই থেকে আত্মীয় স্বজন এলো বলে ছানাপোনা সুদ্ধু করি। এরই মাঝে নিত্যি নিত্যি অশান্তি। চুরি ছেনতাই বাড়ছে। আজ ওই মাগীর নাকের নথ টেনে পালালো তো কাল কোন বাবুর বাড়ির “মারি তো গণ্ডার লুটি তো ভাণ্ডার” করলো। টহলদারগুলো সব এক একটা হয়েছে অকম্মার ধাড়ি।
পড়তে থাকুনচারি দিকে প্রচুর ভিড় জমেছে। পথচলতি মানুষের আর পাড়া বেপাড়ার দল মিলে। ত্রিদিববাবু তারই মধ্যে থেকে চোখ দিয়ে খুঁজে নিলেন সুরঙ্গঁমাকে। ‘এসো মা, সময় হয়েছে,’ বলে ডাকলেন। চোখ ফেড়ে মাতব্বর দেখে বরাবর চোখ নীচু করে হেঁটে যাওয়া মেয়েটা গট্গট্ করে এগিয়ে আসছে তার দিকে। ‘এতো ভিড়ের মধে্য মেয়েছেলেটার হাতে মার খেলে সব পেস্টিজ্ পাংচার’ ভেবে মাতব্বরের জিভ শুকিয়ে এলো।
পড়তে থাকুন