কিংবদন্তী আছে অর্নেষ্ট হেমিংওয়ে ছ’টি শব্দের ছোট গল্প লিখে পাঠককুলকে কাঁদিয়েছিলেন, উদ্বেগে ভাবিয়েছিলেন, দীর্ঘশ্বাস ফেলিয়েছিলেন। বাজি ছিল দশ ডলারের যা তিনি জিতেছিলেন। কী ছিল সেই তীব্র ক’টি শব্দ যা পাঠকের হৃৎপিঞ্জরে বিঁধেছিল অঙ্কুশের মতো?
আর্থার সি. ক্লার্কের ভাষায় — “My favourite is Hemingway’s — he’s supposed to have won a $10 bet (no small sum in the ’20s) from his fellow writers. They paid up without a word… Here it is. I still can’t think of it without crying —
“FOR SALE. BABY SHOES. NEVER WORN.”
হেমিংওয়ে সত্যি এই গল্পটি লিখেছিলেন কি না, তা নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু অনুগল্প লেখার প্রথা অনুসরণ করে এবারে আমার স্বল্পায়তনের একটি গল্প পেশ করলাম। কেমন লাগলো প্লীজ্ কমেণ্ট করবেন।
if your browser doesn’t display Bangla font properly.
গ্রাজুয়েশন করার সাথে সাথে বিয়ের সম্বন্ধ আসতে শুরু করলো। সবারই দেখি যতো রাগ আমার চশমাজোড়ার উপর। আর কোনো গুণ কারো চোখেই পড়ে না। ধুত্তোর নিকুচি, বলে দিল্লী এলাম। মামার বাড়িতে থেকে চাকরির চেষ্টা করছি। একদিন খেলার ছলে শাদি ডটকম সাইটে উঁকি মারছি। ইনা-মিনা-ডিকাদের জন্য ছপ্পর ফাড়কে বিজ্ঞাপন। হঠাৎ চোখে পড়লো এক ব্যাটা লিখেছে — জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে তার জীবনের চড়াই উতরাই পথের জন্য একটি এফিশিয়েণ্ট হাইকার-সাথী চাই। দিলুম দরখাস্ত ঠেসে। উত্তর আসবে ভাবিনি। এলো। এবং দেখা করতে চাইলো।
নিদৃষ্ট দিনে হাজার টেনশানের হাতুড়ি নিয়েই সেজেগুজে নিলাম। কলিংবেল দরজায় নয় যেন বুকে বেজে উঠলো। দরজা খুলে দেখি অস্ত সূর্য্যের লালিমা মেখে এক সিল্যুয়েট।
নানা কথার ফাঁকে বড় অমায়িক এক আবেদন, “এক গ্লাস জল দেবেন?”
ডাইনিং টেবিলে রাখা বোতল থেকে গ্লাসে জল ঢালতে যাবো, ব্যস্, ছিপিটা হাত থেকে গেল ফসকে। টেবিলের তলা, চেয়ারের পায়া, সোফার পশ্চাদ্দেশে চিরুণী তল্লাসি চালিয়ে আমি তো হয়রান!
“আপনি কি এটা খুঁজছেন? এটা তো সামনেই পড়ে ছিলো!” মিস্টার সিল্যুয়েটের হাতে বিসলারির ঢাকনা।”
“ইয়ে, মানে, আজ চশমাটা…”
“কী! আপনার চশমা আছে?”
ওঃ আবার সেই ‘চশমা ব্যাটাই চোর’-এর গঞ্জনা শুরু হলো ভাবছি, তার বদলে শুনি — “তাহলে তো আমাকে এতক্ষণ কিছুই দেখেননি আপনি? অথচ আমি তো আপনাকে চোখের আলোয় শুধু নয়, মনের আলোতে দেখে নিলাম।”
মুচকি হেসে কোমরের খাঁজে গোঁজা চশমাটা চড়াৎ করে চাপিয়ে নিলাম নাকে। দেঁতো হেসে বললাম, “জাস্ট ইন কেস! কাছেই ছিলো। কানা বৈরাগী হয়ে ফাইনাল করতাম না। চোখে চোখে কথা তো সারাই হয়ে গেলো, এবার মনের কথা সারতে নেক্সট সাটারডে লোদী গার্ডেন। রাজী?”
দরাজ গলায় উত্তর এলো, “বিবি রাজী তো মিয়াঁ রাজী, হু কেয়ারস্ ফর কাজী?”