Download this post in PDF format if your browser doesn’t display Bangla font properly.
(পূর্বানুক্রমে)
রাতভর কলুটোলার বাবুর দু’ চোখের পাতা এক হল নাকো। আহা, তাঁর প্রাণের দখিনা বাতাস টুকলি কি না টুক্ করে গিয়ে ব্যজন খাওয়াবে ঐ মুশকো দঁকে? “হা ভগবান! কি তিথি নক্ষতর দেকে ঘরে বৌ এনেছিলাম!” ছেলেও ফুঁসছে ভেতরে ভেতরে। বৌ অন্দরমহলে না থাকাটা একরকম সামাজিক অপমান বৈ কি! তার এক গোঁ। রাঁঢ় আর ঘরের বৌ মিলালে চলে না।
ভাববার অবকাশ কিই বা ছিলো! সবে ষষ্ঠী পুরে সপ্তমী হল, আর ঘরে ঘোর অমঙ্গল! কলুটোলার বাবু রাত পোহানোর সঙ্গে সঙ্গে মনস্থির করে ফেললেন। টুকলিবাঈকে বল্লাল আসবেখন দিয়ে দঁ-এর বাগানবাড়িতে তুলে। আর হাতে হাতে আনবে সেই অলৌকিক সবুজ দু্যতির মণি। যা পেলে কলুটোলার মান সম্ভ্রমের জোড়াতালিতে পড়বে শক্ত সুতোর বাঁধন।
একবার মনস্থির করে ফেলে বাবুর মন কিছু হালকা হল। তখন তাঁর খেয়াল হল, আরে, বৈঠকখানায় গুপ্তিপাড়ার গোপীমোহন তো অনেকক্ষণ হল বসেচে! তড়িঘড়ি বৈঠকখানায় ঢুকে এলেন বাবু। গোপীমোহন তখন ঘরের চার দেওয়ালে ঝোলানো বাঘা বাঘা চেহারার ঝোলা ঝোলা গুঁপো বাবুর চোদ্দপুরুষদের দেখে দেখে বিরাট বিরাট হাই তুলছিলো। বাবুকে ঢুকতে দেখে হাতজোড় করে শশব্যস্তে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, “আজ্ঞে, কাল একবারটি গুপ্তিপাড়ায় পায়ের ধুলো চাই। জোর হাফ আখড়াই আসর বসবে। রাত গভীরে থাকবে খেমটা। না করবেন না!”
কলুটোলার বাবু কিছু অন্যমনস্ক হলেন। অন্য সময় হলে আলাদা ভাবতে হতো না। আহা, এদের রাধা-কেষ্টর রসের পালা জমে বড় ভালো। গোলাপী নেশা আরো ঘন হয়ে আসে। মাইরি রাধার রসালো বিলাপে “গোপনে যতেক সুখ, প্রকাশে ততো অসুখ, ননদী দেখিলে পরে প্রণয় কি রয়?” তারপর রাধারাণীর কাঁকাল দুলিয়ে চুলে বেণীর ঝাপটা মেরে সে কি মনমাতানো নাচ —
“চল সই বন্ধ ঘাটায় যাই
আঘাটের জলের মুখে ছাই।
ঘোলা জল পড়লে পেটে
গাটা অমনি গুলিয়ে ওঠে
পেট ফেঁপে চোঁয়া ঢেকুর ওঠে —
হেউ হেউ হেউ।”
“আহা, অমন ডাগর ডোগর রাধার বুক চেপে ধরে হাউ হাউ করে সে কি গো চুমরানি!”
“যে এঁজ্ঞে!” বেয়াড়া কণ্ঠের ডাকে ঘোর কেটে চোখের সামনে গোপীমোহনের গুঁপো মুখ দেখে বড় ব্যাজার হলেন কত্তা। “দেকি। যাবার তো ইচ্ছে! মা আনন্দময়ী। মায়ের ইচ্চে হলে যাবো!”
যা গেরো যাচ্চে! বৈঠকখানার মেকাবি ঘড়িতে টং টং করে বিকেল পাঁচটা বাজল। আজ সকাল থেকে টুলোর দেখা নেই। সপ্তমীর পূজা যেমন তেমন করে সামাল দেওয়া গেছে ঘরের পুরুতঠাকুরকে দিয়ে। কিন্তু দুগ্গা পূজা বলে কতা! মায়ের স্নান, সজ্জা, আরতি, ভোগ এসবের হবে কি! টুলোর গৃহে লোক পাটিয়েও কোনো লাভ হয়েনি কো। উল্টে টুলো গিন্নী বাপান্ত করে ছেড়েছে কলুটোলার বাবুর। “কে এক সব্বোনেশে মাগী, তার ঠেঙে ঘর বিবাগী! এমন ভাতারকে মুড়ো ঝাঁটা মেরে ঘরছাড়ি করতি তো হবেই, তার সাথে ঐ রাঢ়পোষা বাবুরও মুয়ে গু পড়ুক! সব্বোনাশ হোক!” বলে উভয়েরই আদ্যশ্রাদ্ধ করতে লাগলো টুলো বামুনের গিন্নী।
ইতিমধ্যে ভেতরবাড়িতে মহা অশান্তির রোল। টুকলি হস্তান্তর না হওয়া অবধি গিন্নী অন্নজল ত্যাগ করেচেন। ন’ ছেলে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চাকর ঝি সব চুপচাপ। চণ্ডীমণ্ডপে ঢাকের বাদ্য নেই। নেই কাঁসর ঘণ্টা। ধূপ-দীপ না পেয়ে ম্রিয়মান হয়ে একা আটচালায় বসে আছেন মা। নিমন্ত্রিত অনিমন্ত্রিত কিছু লোক যাচ্চে আসচ্চে। বাবুর বাড়ির ভেতরের অগ্নিস্ফুরণের খোঁজ তারা কি জানে! তারা ঠাকুর দর্শন করে টনাৎ করে টাকা ফেলে দিয়ে চলে যাচ্চে।
“ধুত্তোর শালা! নিকুচি গিয়েচে,” বলে বল্লালকে বিকট একটা হাঁক দিলেন বাবু। তাঁর অনুপস্থিতিতে টুকলিকে দঁ-এর বাগানবাড়িতে পৌঁছে দেবার নির্দেশ দিয়ে হনহনিয়ে চললেন ভেতরবাড়িতে। ফুলেল ধুতি পাঞ্জাবী, বেলফুলের মালা হাতে গোলাপী নেশায় চুরচুর হতে এই দণ্ডেই যাবেন গুপ্তিপাড়া। সেকেনে রাতভর মাতবেন বারো ইয়ারী পূজার মৌতাতে।
কোলকেতায় সদ্য শুরু হয়েছে বারো ইয়ার মিলে পূজো ‘বারোইয়ারী’। মহাজন, গোলদার, দোকানদার, হাটুরে সবাই উদযুগে। সারা বচ্ছর যত মাল বিক্কিরি হয়, মণ পিছু এক কড়া, দু কড়া করে বারোইয়ারী খাতে জমা হয়। এলাকার বর্ধিষ্ণু সৌখীন লোকের কাছে জমা থাকে সেই টাকা। তিনিই হন বারোইয়ারী পূজার অধ্যক্ষ। অন্যেরা কেউ চাঁদা আদায় দেখে। কেউ রং তামাশার ব্যবস্থা দেখে।
ষোল বেহারার পালকিতে বসে মদ্যপান করতে করতে মোসাএব কানাই দত্তকে বাবু বললেন, “কেনো! এত্খনে বল্লালের কাঁখে চড়ে টুকলি বিসজ্জন হয়ে গেলো বোধয়।” কানাই বিনীত হাত জোড় করে বললে, “যে আজ্ঞে।” কিছুক্ষণ পর বাবু বল্লেন, “ন’ খোকা কি রওনা দিলো শ্যামবাজার, শালার দঁ বল্লালকে সবজে মণি দিলো কি! উফ্ আর পারিনে।”
আরো দু-চার ঢোঁক ‘আর পারিনে’-র দাওয়াই গিলে বাবু গোঁপ পুঁছে খাড়া হয়ে বসার চেষ্টা করলেন। “উঃ মাইরি, একখান্ পান্না বটে! ঐ মণির কাচে টুকলি ফুকলি, আহাঃ, ওহোঃ, টুকলি, টুকলি রে! হাঁ, যাক গা, যা বলচিলুম, ওসব টুকলি-ফুকলি কিসু্যনা, কেমন!”
কানাই আবার বিনীত গলায় জানায়, “আজ্ঞা। তবে কি না ও মণি যাবে ন’ বৌমার মেনি বেড়ালের গলায়। হুজুর, বেল পাকলে কাকের কি ক’ন!” এই কথা শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে ভোম্বল হয়ে রইলেন কত্তা। তারপর ভ্যাঁক করে দিলেন কেঁদে। অতঃপর রাস্তাভর চলতে থাকলো তেনার কান্না আর হেঁচকি।
গুপ্তিপাড়ার বারোয়ারি তলায় তখন মেলা চমক গমক। গোপীমোহনের চ্যালা চামুণ্ডারা আজ হপ্তা দুই ইস্তক বেলা দুটো অবধি না খেয়ে না দেয়ে বাড়ি বাড়ি, দোকান-আড়ত ঘুরে প্যালা জোগাড় করেচেন। দলের বিরিঞ্চি যেন কোতোয়ালের পেয়াদা। কারো কারো বাড়ির উনুনে পা দিয়ে সে চাঁদা আদায় করে ছেড়েচে। কত কত বড়মানুষকে তুষ্ট করতে মোসাএবির চূড়ান্ত করেচে। এই তো, যেমন পাড়ার দত্তবাবু! কম মাল না কি! কিছুতেই ধরা যায় না চাঁদা আদায়ের জন্যে। বিরিঞ্চিও থাকে তক্কে তক্কে। শেষে কাক ভোরবেলায় দাঁতনরত দত্তকে গিয়ে এক্কেরে জাপটে ধরলে বিরিঞ্চি। পাড়া কাঁপিয়ে “ধরেছি, ধরেছি” বলে বিকট চীৎকার জুড়লে। লোক জমে গেলো দেখতে দেখতে। কি ব্যাপার? না, “দত্তমশাইকে স্বপ্নে দেখিয়ে মা বল্লেন, বিড়ে দত্তর পোর থেকে আমার সেবার জন্য কিচু নে। এতে ওর মঙ্গল হবে। তাই তো আমি সেই কাক ভোর থে রাতে পেঁচা ডাকা পজ্জন্ত এনারে খুঁজে ফিরচিলাম!” বিরিঞ্চির কথার বানে ভেসে গেলো দত্তের সকল জারিজুরি। সবার সামনে কড়করে দশটি টাকা মায়ের সেবায় দিতে হল বৈ কি!
এবার গুপ্তিপাড়ার দুগ্গা পূজোর সং আর চুঁচড়োর সং সাজের বেড়ে লড়াই। চুঁচড়োর সং জগৎ বিখ্যাত। তাদের পূজোর বোলবোলাও প্রচুর। কোলকেতা আর অন্য অন্য শহর থেকে বাবুরা বোট, বজরা, ভাউল ভাড়া করে সং দেখতে আসেন। এতো লোকের ভিড় যে কলাপাতা বিক্রি হয় এক টাকায়। চোরেদের ঘরে উৎসব লাগে। দীন দুঃখী ভিখিরি ক’দিন ভরপেটে খেতে পায়। চুঁচড়োর পূজোর সাথে টক্কর লাগে আশেপাশে গুপ্তিপাড়া, কাঁচড়াপাড়া, উলোর পূজোর। এরা যদি ছ’ লক্ষ টাকা চাঁদা বাবদ খরচা তোলে ওরা সাড়ে ছ’ করবেই।
বারোয়ারি পূজো সাধারণের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়ও হচ্চে। বাবুবাড়ির পূজোতে সাধারণ লোকের স্থান কই? বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে নিমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে বাবুরা দেখা করার সৌজন্যটুকু করেন না। তাই গোলাপ জলে শৌচাদি করা, মুক্তাভস্মের চুন দিয়ে পান খাওয়া, ঢাকাই কাপড়ের পাড় ছিঁড়ে পরা আজ্ঞা হুজুর, উঁচু গদী একপাল মোসাএব ঘেরা, রক্ষিতা বেশ্যা ঘেরা বাবুদের থেকে তফাতেই থাকে সাধারণ মানুষ। তারা বরং অনেক বেশী স্বাচ্ছন্দ বোদ করে এই বারোয়ারি পূজোগুলোয় যেখানে সবার জন্যই আছে অবারিত দ্বার। কেবল কাঙ্খিত চাঁদাটি দিলেই হল!
সন্ধ্যে নেমে এলো। গয়লারা দুধের হাঁড়ি কাঁধে চলেচে। গ্যাসের আলো জ্বলে উঠল। আজ কেরানীবাবুদের আপিস ছুটি দুর্গাষ্টমীতে। তাঁরা দলে দলে চলেচেন পাড়ায় পাড়ায় ঠাকুর দেখতে। গুপ্তিপাড়ার বারোয়ারিতলায় মেলা ভিড় জমেচে। মায়ের বিশ হাত প্রতিমা। রং ঢং-ও দেখার মতোন।
অষ্টমীর আরতির শেষে গোপীমোহনের বৈঠকখানায় মহা গুরুগম্ভীর আলোচনা চলচে। বারোয়ারি পূজা কমিটির মাতব্বররা মণ্ডপ থেকে একে একে এককাঠা হয়েচেন। বিষয় — নবমীর সং-এর থিম্ নির্বাচন। এবার চুঁচড়ো পার্টির থোঁতা মুখ ভোঁতা না করলেই নয়!
পাঠক — আমাদের কলুটোলার বাবু যতক্ষণ বাঁকা সিঁথি কেটে, পইতের গোছা গলায়, জবাফুলের মতো লালচক্ষু করে, কানে তুলোয় চোবানো আতর দিয়ে গোপীমোহনের বৈঠকখানায় আসছেন, ততক্ষণ দুটো কথা কয়ে নি।
বাংলার নবাবী আমলের পতনের সঙ্গে সঙ্গে সমাজের চালচিত্রটা গেল বদলে। ইংরাজ রাজের পতন হল। বড় বড় জমিদার রাজা মহারাজাদের তখন আর সেই রমরমা নেই। যা আছে তা উচ্ছিষ্ট মাত্র। পুঁটে তেলী, গবা মুন্সী — এরা বুদ্ধি খেলিয়ে ব্যবসা করে রাজা হয়ে বসলো। টাকা বংশগৌরবকে টেক্কা দিয়ে গেল। ফলে টাকার গরমে রামচরণ মুদ্দাফরাস, বিষ্টু বাগদী, পাঁচু ডোম, পেঁচো শীল — এরাই মুরুব্বী হয়ে উঠলো। আর যত আখড়াই, হাফ আখড়াই, পাঁচালী, যাত্রার জন্ম হল, তারা এক একজন মুরুব্বী ধরে নিলো। শহরের বড়মানুষদের লাগামছাড়া আমোদ ফুর্তি চললো। এতে শিক্ষা বা সংস্কৃতি বা কৌলীন্যের কোন ছাপ ছিল না। বাবুদের মোসাএব, উমেদার, পাড়ার যত অপোগণ্ড, এমনকি পুজুরি বামুনগুলোও আখড়াই দলের দোহার হয়ে নতুন মাতব্বর বাবুদের চোখের মণি হয়ে ওঠার চেষ্টায় মাতলো। বামুন-কায়েত, শুদ্র-ডোম সব এসে এক চোরাবালির স্রোতে ভেসে চললো।
বালাখানা থেকে আগেভাগেই গোপীমোহনের চাকর নকুড় খান কুড়ি বেল লণ্ঠন আনিয়ে রেখেছিলো। উটোনে জাজিম পাতা হয়েচে। দেয়ালগিরিতেও বাতি জ্বলচে। পান, থেলো হুঁকো ঘুরচে হাতে হাতে। গোপীমোহন পানের পিকদানে পিচিক করে পিক ফেলে বললেন, “আমাদের বারোয়ারিতলায় ‘ভাল কত্তে পারবো না মন্দ করবো, কি দিবি তা দে’, ‘বুক ফেটে দরজা’, ‘ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে’, ‘কাণা পুতের নাম পদ্মলোচন’, ‘মদ খাওয়া বড় দায় জাত থাকার কি উপায়’, ‘হাড় হাবাতের মিছরির ছুরি’ — এই সবগুলো সং-ই যথেষ্ট মজ্জাদা পেয়েচে। এবারে একখানা জমজমাট সং হচ্চে তো?”
বিরিঞ্চি তার তেল চুব্চুবে চুলে হাত বুলিয়ে গলা খাঁকড়ে বললে, “এবার আমাদের পিতিমে বিশ হাত হয়েচে। লোকের ভিড় তো উপচে পড়চে, মায়ের তাক লাগানো রূপে!”
“তা হবে নে?” গড়াই ফুট কাটলে। “বিশ হাত উঁচু পিতিমে। ঘোড়ায় চড়া গোরা, বিবি, পরী, নানারকম চিড়িয়া আর পদ্ম দে সাজানো মায়ের আটচালা। তা বাদে মায়ের ভগবতী জগদ্ধাত্রী মূর্তি। বিবিয়ানা মুখ, রং গড়নে আরমানী ইহুদী কেতা, ব্রহ্মা বিষ্ণু মহেশ্বর এক ঠেঙে দাঁড়িয়ে স্তব কচ্চে, আমাদের কি যে সে প্রতিমে?”
“আহা, তাই তো কচ্চি। নবমীর সং সাজ বড় জোড়তোড় হওয়া চাই।”
এমন সময় হড়্ হড়্ গড়্ গড়্ করে ঘোড়াটানা গাড়ি এসে থামলো গোপীমোহনের সদরে। “বাবা গুপে মোহন! গুপে! অ্যাই ব্যাটা শালার শালা গুপে,” বলে কে যেন জড়ানো গলায় মহা চীৎকার জুড়ে দিলে। বাইরে এসে গোপীমোহনের চ্যালা চামুণ্ডারা লত্পতে কলুটোলার বাবুকে আবিষ্কার করলে। বলা বাহুল্য, বাবুর এহেন শালার শালা সম্ভাষণে গোপীমোহন আনন্দিত হল না। এখন এই ল্যাজে গোবরটাকে নিয়ে কি করা যায় ভাবতে ভাবতে চমৎকার একখানা আইডিয়া এসে গেলো গোপীমোহনের মাথায়।
(ক্রমশঃ)